ক্যাম্পাস বুলেটিন:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আগামী ৩ মে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আগামী ২১ জানুয়ারি বিকাল ৪টা থেকে অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন। তবে এবারের ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে একটি বিতর্কিত বিষয় জড়িত, যা হলো আবেদন ফি।
বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, এবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ৭০০ টাকা ফি দিতে হবে। বিগত বছর এ ফি ছিল ৩৫০ টাকা, অর্থাৎ এবার ফি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, বিগত কয়েক বছর ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে ভর্তিতে তেমন ব্যয় ছিল না। এবার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় খরচ বেড়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান জানিয়ে দেন, “এবার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর তো ভর্তি পরীক্ষা ছিল না। স্বাভাবিকভাবে খরচ বাড়বে। তারপরও হিসাব কষে কর্তৃপক্ষ যতটা সম্ভব কম ফি নির্ধারণ করেছে।”
তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত প্রকাশ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন। যশোর এম এম কলেজের ভর্তিচ্ছু আনজুমান আরা ফেসবুকে লিখেছেন, “ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি ফি ৭০০ টাকা! গতবার যা ছিল, তার চেয়ে আরও বেড়েছে। অথচ আমরা শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছি বৈষম্য দূর করার জন্য। এ ফি কমানো উচিত।”
অন্যদিকে, আব্দুর সালাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “ভর্তি ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মানি না। পারলে ভর্তি ফি কমান। নতুন বাংলাদেশে বাড়তি ভর্তি ফি দিয়ে আমরা আবেদন করবো না। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবো।”
এছাড়া এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের কথাও উঠেছে। ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা-পোষ্য কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা কিছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি সৃষ্টি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ এবং অসন্তোষ বাড়ছে। তারা মনে করেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ফি বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই ভর্তির ফি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে এবং তাদের দাবি, শিক্ষার ক্ষেত্রে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের পেছনে একটি যুক্তি রয়েছে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের আপত্তি এবং ক্ষোভের প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তারা মনে করছেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যয় কমানো এবং সুযোগ বাড়ানো উচিত, যাতে সবাই সমানভাবে শিক্ষার সুবিধা পায়।
এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের প্রতি সাড়া দেয় এবং ভবিষ্যতে ভর্তি ফি সম্পর্কে তাদের সিদ্ধান্তে কী পরিবর্তন আসে। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, এবং তাদের দাবি ও প্রতিবাদের ফলে পরিস্থিতি বদলানোর সম্ভাবনা রয়েছে।