রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল ও শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত, পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ থেকে পাঠ ও অতিথিরা বক্তব্য রাখেন। পরে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল ও শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে নবীন ও পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ আজীবন ছাত্রত্ব বজায় রাখা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আনন্দ নতুন কিছু শেখা ও নতুন কিছু বুঝা। এই ক্যাম্পাসে তোমরা বারবার নির্যাতিত হয়েছো, নিগৃহীত হয়েছো, অধিকার হারিয়েছো। আজকের এই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা তোমাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই ক্যাম্পাসে তোমাদের স্বাধীনতা, সম্মান অধিকার ও মর্যাদা আমরা যতদিন আছি সেটা নষ্ট হতে দেবো না। ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ঢুকলে তাদের পরিচয় হয় ‘ইয়াং স্কলার’ হিসাবে। গত কয়েক বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শব্দটার যত বাজে ব্যবহার হয়েছে আমরা চাইনা ‘ইয়াং স্কলার’ শব্দটার এধরণের ব্যবহার হোক। আমরা চাই দেশের মাটিতে পা রেখে মাথাটা কতটুকু উঁচু করতে পারি সেই চেষ্টা করার। আমাদের গণ্ডি শুধু দেশের মধ্যে থাকলেই হবে না, সারা বিশ্বের উন্নয়নে আমাদের ভুমিকা রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে নবীনবরণ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, ‘মেধাবী গর্বিত সদস্যের অধিকার নিয়ে মতিহারের সবুজ চত্বরে তোমাদের পদার্পনকে স্বাগত জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে অনেক রকম অপরিচিত মানুষ থেকে এক হয়ে ওঠার মিলনক্ষেত্র। চুড়ান্ত মেধার পরীক্ষা দিয়ে তোমরা এখানে এসেছো। সৃজনশীল আত্মপ্রত্যয় ও মানবিক শিক্ষার্থী হিসেবে সারাজীবনের অভিজ্ঞতা পুঞ্জীভূত হয়ে তোমাদের জীবন হয়ে উঠবে মতিহারের এই সবুজ চত্বরে। মননে সৃজনশীলতায় তোমরা সফল মানুষের আদলে একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ব্যক্তিসত্তা হয়ে উঠবে এই আমার কামনা।’
নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমার মতো অনেকের কাছে এক আবেগের নাম। সবুজে ঘেরা ৭৫৩ একরের এই ক্যাম্পাস আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করেছে। প্রকৃতির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা গুলোও সুন্দর ও আধুনিক নির্মাণ শৈলীতে নির্মিত। আমি মনে করি এ প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পূর্ণতা পাবে। এটা শুধুমাত্র একটা একাডেমিক যাত্রার শুরু নয় বরং চিন্তা ও মননের বিকাশের নতুন দ্বার।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামাণিক। সঞ্চালনা করেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবীব। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদ অধিকর্তা, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-কর্মকর্তারা এবং নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।