বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথমে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার। কিন্তু এ দাবি উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের একাংশ শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আয়োজনের তোড়জোড় শুরু করেছে।
জানা গেছে, চলতি মাসের মধ্যে বেরোবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে গত ২ জানুয়ারি একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক আমির শরীফ, এবং অন্য দুই কমিশনার হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানজিদ ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক বিপুলকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তারা কঠোর আন্দোলন শুরু করবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য এস এম আশিকুর রহমান বলেন, “আমরা চাই না বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঘটুক। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।”
আরেক আন্দোলনকারী আরমান হোসেন বলেন, “আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশে পরিচালিত হোক। অতিদ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়িত করার দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে বেরোবি শিক্ষক সমিতির নবগঠিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমির শরীফ বলেন, “আমরা এখনো কাজ শুরু করিনি। একটি জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে এবং শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির আহ্বায়ক ড. ফেরদৌস রহমান জানিয়েছেন, তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করেছেন এবং শিগগিরই রূপরেখা প্রকাশ করবেন।
অন্যদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “শিক্ষক সমিতি নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের অনুমতি লাগবে না। তবে সংস্কারের আগে শিক্ষক সমিতি গঠনের সিদ্ধান্ত আসেনি। আগামী সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের চূড়ান্ত নকশা দেওয়া হবে।”
এ পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাজপথে নামতে প্রস্তুত রয়েছে।