রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটা বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশে এ মানববন্ধন শুরু হয়।
গত ২ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ওইদিন প্রশাসনিক ভবনে তালাবদ্ধ করে উপ-উপাচার্য, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আটকে রাখা হয়। ফলে প্রশাসন বাধ্য হয় পোষ্য কোটাকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে। তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাভোগী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এরই প্রেক্ষিতে তারা আজকের মানববন্ধন আয়োজন করে এবং আগামী দুই দিন এই আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে আমরা আন্দোলন সফল করতে পারিনি, কিন্তু জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা সবসময় আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। যে আন্দোলনের কারণে আমরা ঘরছাড়া ছিলাম, জেল খেটেছি এবং এখনো পর্যন্ত সেই আন্দোলনের আসামি। আমাদের সন্তানেরা ন্যূনতম যোগ্যতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে যেখানে মাত্র ৭৮ জন ভর্তি হয়েছে, সেখানে আমাদের শিক্ষার্থীরা বলছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে ভর্তি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আটকে রাখা কতটা যৌক্তিক, তা আমার জানা নেই। ২ তারিখ সারাদিন আমাদের আটকে রাখা হয়েছে, আমরা খেতে পারিনি, অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এভাবে কষ্ট দিয়ে দাবির আদায় করা আমরা কখনোই সমর্থন করি না। এখন আমাদের প্রশাসনের কাছে দাবি, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।”
মানববন্ধনে জানানো হয়, প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে। প্রশাসন ভবনের পশ্চিম পাশের এলাকায় আগামীকাল আবারও ২ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে এবং পরের দিন (৮ জানুয়ারি) সারাদিন আন্দোলন কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত এক মাস ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। এতে প্রশাসন ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানের কোটা বাতিল করে কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১% কোটা রাখে। তবে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে প্রশাসন শেষ পর্যন্ত পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে।